Header Ads

ইলিশ কিনে প্রতারিত হচ্ছেন নাতো? হুবহু দেখতে ইলিশের নামে ফরমালিনযুক্ত চন্দনা মাছ চড়া দামে বিক্রি করে প্রতারণা করছে বিক্রেতারা | ইলিশ ও চন্দনা মাছ চেনার উপায়!

যারা ঢাকাতে থাকেন তারা জানেন, ইলিশের দাম কতটা চড়া ও কড়া! তাই অনেক সময় বাসা বাড়িতে ঝুড়ি ভরে ইলিশ নিয়ে আসা ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে কম দামে ইলিশ কিনতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন ক্রেতারা। দামেও কিছুটা সস্তা, কিনে ‘স্বস্তি’! তবে, খাওয়ার সময় বোঝা যায় সস্তার আসলে কী করুণ অবস্থা!

ইলিশ লবণাক্ত পানির মাছ বা সামুদ্রিক মাছ, আর চন্দনা মাছও সামুদ্রিক। দেখতেও প্রায় একই রকম। এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে চন্দনা নামের মাছকে ইলিশ বলে চালিয়ে দিচ্ছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী চন্দনা মাছের
বৈজ্ঞানিক নাম: Tenualosa toli / sardine
ইংরেজিতে বলা হয় : Toli shad

চন্দনা মাছের ধরন ও অবস্থান__
এই মাছ অধিক লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে, নদীগামী, পানির উপরিভাগে চলাচল করে এবং উপকূলীয় জলাভূমিতে ঝাঁকে ঝাঁকে এদের দেখা যায়।

সার্ডিন বা চন্দনা নামের মাছটি দেখতে অবিকল ইলিশের মত। চেহারা অবিকল ইলিশের মতো, কিন্তু আসলে ইলিশ নয়। এই মাছটিকে কেউ-কেউ ‘সার্ডিন’, ‘চাকোরি’, ‘কলোম্বো’ ও ‘ডটেড গিজার্ড শাড’ নামেও চেনেন। গুণে-মানে ‘মাছের রাজার’ ধারে কাছে না থাকলেও এই মাছটিই এখন রাজধানীর বাজারজুড়ে ‘ইলিশ’ নামেই বিক্রি করে জনগনকে ফুলিশ বানাচ্ছে।। সো বি কেয়ারফুল ক্রেতা ভাই বোনেরা ও আংকেল আন্টিরা!

♣ আসল ও নকল ইলিশ চেনার উপায়!
চন্দনা ও ইলিশের পার্থক্য :-

একটু লক্ষ করে দেখুন তো! পার্থক্য ধরতে পারেন কিনা! যদি না পারেন তবে আমাকে ছবি পাঠাতে পারেন। অবশ্য দাওয়াত দিলেও মন্দ হবে না। একবারে খেয়ে দেয়ে স্বাদ বুঝতে সুবিধে হবে। কী বলেন?

হাহাহা.... আম যাস্ট কিডিং..

ওকে তো চলুন দেখে নেই, কেমন দেখতে!
আপনাকে নয়, ইলিশকে!

পার্থক্যসমূহ :-

১। চন্দনা মাছের গায়ের রং ইলিশের মতো সাদা হলেও পিঠ ইলিশের মতো রুপালি লাবণ্য নেই। চন্দনা মাছের পিঠের আশ কালচে বর্ণের।

২। ইলিশের থেকে চন্দনা মাছের পুচ্ছপাখনা লম্বা। চন্দনার মাথা ছোট। চোখ বড় বড়।

৩। চন্দনা মাছের দেহের দৈর্ঘ্য সাত সেন্টিমিটার থেকে বিশ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ইলিশ বেশ বড় (৭৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত) হয়ে থাকে।

৪। চন্দনা মাছের মাথার আকৃতি ছোট ও অগ্রভাগ ভোতা। ইলিশের মাথার আকৃতি লম্বাটে ও অগ্রভাগ সূচালো।

৫। চন্দনা মাছের পৃষ্ঠীয় পাখনার অগ্রভাগে এবং পুচ্ছ পাখনার কিনারা ঘোলাটে। ইলিশের পৃষ্ঠীয় পাখনার অগ্রভাগে এবং পুচ্ছ পাখনার কিনারা সাদাটে।

৬। চন্দনা মাছের চোখের আকৃতি তুলনামূলকভাবে বড়। আর আসল ইলিশের চোখের আকৃতি তুলনামূলকভাবে ছোট।

তথ্য সূত্র: (জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গ্রন্থ, পৃষ্ঠ-৭৯ থেকে ৮২)
__________________

মৎস সম্পদ গবেষণায় দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সতর্কীকরণ ও করণীয় বার্তা!

@ লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকমর্তা আলেকুজ্জামান বলেন, ইলিশ ও সার্ডিন যেন সহজে চেনা যায় সে জন্য হ্যান্ডবিল ও পোস্টারের মাধ্যমে মানুষদের সচেতন করা হচ্ছে।

@ লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. বাসেদ মাহমুদ বলেন, সার্ডিন মাছ খেতে বাধা নেই। এতে ভিটামিন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম আয়রন ও সেলেনিয়ামের গৌণ খনিজ লবণ রয়েছে। সার্ডিন হলো সামুদ্রিক ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের প্রাকৃতিক উৎস্য যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। তবে ফরমালিন যুক্ত যে কোনো খাদ্য মানবস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর ও হুমকি স্বরুপ।

@ সবচেয়ে ভয়ংকর খবর হলো_____

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্ম সচিব) মাহবুব কবীর মিলন জানান, হুবহু ইলিশ মাছের মতো দেখতে একই মাছ কলম্বো সাদ ও গিজার্ড সাদ নামে আমদানি করা হচ্ছে। দেশীয় বাজারে চান্দিনা বা চাদিনা নামে বিক্রি হওয়া এ দুটি মাছে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হেভি মেটাল উপাদান পাওয়া গেছে।

বাজার থেকে ক্রেতারা টাকা দিয়ে প্রকারান্তরে বিষ কিনে খাচ্ছেন।

তিনি জানান, স্বাভাবিক মাত্রায় মাছে (এমজি/কেজি) লেড এর পরিমাণ শূন্য দশমিক ৩ ভাগ হলেও ল্যাবরেটরির পরীক্ষায় ৫ গুণ বেশি সীসা (১ দশমিক ৫৫৯ ও ১ দশমিক ৬৯৯ (এমজি/কেজি) পাওয়া গেছে। এছাড়া দ্বিগুণের বেশি ক্যাডমিয়াম (সিডি) পাওয়া গেছে। তিনি জানান, মাছের নামে বিষ আমদানি বন্ধে আমদানিকৃত মাছের চালান ল্যাবরেটরি টেস্টের ফলাফল ছাড়া খালাস না করতে অনুরোধ জানিয়ে কাস্টমসকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বাংলাদেশ ফুড সেইফটি অথরিটি)।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিয়ানমার, ফিলিপাইন ও ওমান থেকে আমদানিকৃত কথিত এ ইলিশ মাছ দেশের বাজারে আসছে। মিয়ানমার থেকে আনা মাছ টেকনাফে ভ্যাট কাষ্টমস্ কমিশনার কার্যালয় ও অন্যান্য দেশ থেকে আসা মাছ চট্টগ্রাম ও ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে আসছে।

বেশি মুনাফাজনক হওয়ায় এ মাছ দেদার আমদানি হচ্ছে। শুধু হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি মাসে ১ টন মাছ আমদানি হচ্ছে।

সবশেষে একটি কথা না বললেই নয়, তাহলো ইলিশের দেশে চন্দনা মাছ খাওয়াতে কোনো সমস্যা নেই। আপত্তি হলো এর আমদানি ও বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ার ধরন নিয়ে!

এমন পরিস্থিতিতে ইলিশ খেতে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। জেনে শুনে ও চিনে ইলিশ কিনতে হবে।

তবে ফরমালিনমুক্ত চন্দনা মাছ খেতেও বাধা নেই। কিন্তু ইলিশের নামে আপনি যেন কোনোপ্রকার প্রতারিত না হোন, সেজন্য আপনাকেও সচেতন হতে হবে!
_____________________ ♣

বঙ্গোপসাগর থেকে ধৃত এক নৌকা ইলিশ মাছ। (ছবি)' 
বঙ্গোপসাগর থেকে ধৃত ইলিশ

চন্দনা মাছ

চন্দনা মাছ

ইলিশ মাছ


ছবিতে ইলিশ ও চন্দনা!

ইলিশ মাছের স্বাস্থ্য উপকারিতা!
------------------------------------ ♣
ইলিশ মাছে চর্বি কম থাকে। এটি হার্টের জন্য উপকারী। সপ্তাহে একবার ইলিশ খাওয়া হার্টের জন্য ভালো।

ইলিশ মাছ রক্তনালির স্বাস্থ্য রক্ষায় ভালো। এটি হাড়ের জন্য উপকারী।

ইলিশের ভিটামিন এ চোখের সুস্থতা রক্ষায় সাহায্য করে।

ইলিশ মাছের মাথা ও মাছের অংশে রয়েছে পর্যাপ্ত মিনারেল। এটি শিশু স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

শ্বাসনালি ও থাইরয়েড গ্রন্থির সুরক্ষায় এই পুষ্টি উপাদান কাজ করে।

ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় ও রোদ থেকে ত্বকের ক্ষতি হওয়া প্রতিরোধে ইলিশ মাছের ওমেগা তিন সাহায্য করে।

সাজিদ আল সাহাফ
সিইও
RadioDoctor
সিএ
সাসএইড
সিএম
দ্বীন হাসপাতাল

No comments

Powered by Blogger.